ইউটিউব রিভিউয়ার ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’ সিনেমাটিকে একটি অত্যন্ত দুর্বল চলচ্চিত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা পূর্বের কিস্তি ‘ডোমিনিয়ন’-এর চেয়ে সামান্য ভালো হলেও তা মোটেও প্রশংসার যোগ্য নয়। তার মতে, সিনেমাটির মূল সমস্যাগুলি নিম্নরূপ:

১. জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ বিভক্ত ও দুর্বল প্লটলাইন:
সিনেমাটি মূলত দুটি ভিন্ন ও সাংঘর্ষিক প্লটলাইনে বিভক্ত— একদিকে কর্পোরেট সংস্থার জন্য রক্ত সংগ্রহের মিশনে থাকা একদল ভাড়াটে সৈনিক (mercenaries), এবং অন্যদিকে ডাইনোসর-উপদ্রুত দ্বীপে ভুলবশত ছুটি কাটাতে আসা এক বিরক্তিকর পরিবার। রিভিউয়ারের মতে, এই দুটি অংশকে বাজেভাবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে পরিবারের প্লটটিই কেন্দ্রীয় হয়ে ওঠে, কিন্তু তাদের চরিত্রগুলি চরমভাবে একঘেয়ে ও উদ্দেশ্যহীন।
২.জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ এর চরিত্রগুলির অগভীরতা ও দুর্বল অভিনয়:
জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ দেখানো পরিবারের চরিত্রগুলি ফ্ল্যাট এবং তাদের মধ্যে কোনো চরিত্রেরই উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটেনি। এমনকি কন্যাটির “দুশ্চরিত্র” (douchebag) প্রেমিকও শেষ পর্যন্ত তার চরিত্র ধরে রাখে, এবং বাবার সাথে তার সম্পর্কের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিণতি দেখানো হয়নি। অন্যদিকে, স্কারলেট জোহানসন অভিনীত ভাড়াটে সৈনিকদের নেত্রী জুরার চরিত্রে অভিনয় “অটো-পাইলটে” ছিল বলে মনে হয়েছে, এবং তিনি তার সহকর্মীদের মৃত্যুতে কোনো আবেগ দেখাননি, যা তাদের মধ্যকার কথিত “ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব” প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
৩. অবিশ্বাস্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও হাস্যকর ব্যাকস্টোরি:
ডাইনোসরদের দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণটি অত্যন্ত হাস্যকর ও অবিশ্বাস্য। একটি ল্যাবরেটরিতে একটি চকোলেট বারের মোড়ক দরজায় আটকে গিয়ে সেটি বন্ধ হতে না পারার ফলে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনরায় চালু হয় এবং সব ডাইনোসর খাঁচা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। রিভিউয়ারের মতে, এমন ত্রুটিপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নকশা করার বিষয়টি “বিস্ময়করভাবে খারাপ”।

৪. অকার্যকর ডাইনোসর ও উত্তেজনা সৃষ্টিতে ব্যর্থতা: জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ ডাইনোসরগুলি, বিশেষ করে জেনোমর্ফ-অনুপ্রাণিত নতুন প্রজাতির ডাইনোসরটি, শিকারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অদক্ষ ও ধীরগতিসম্পন্ন। তারা কখনই মানব চরিত্রদের জন্য সত্যিকারের হুমকি তৈরি করতে পারে না, যার ফলে প্রতিটি উত্তেজক মুহূর্ত “পানির ফোঁটার” মতো মনে হয়। চরিত্ররা “গড মোড” বা চিটকোড সক্রিয় করে খেলছে বলে মনে হয়েছে, কারণ তারা কখনই বিপদে পড়ে না।
৫. উদ্দেশ্যহীনতা ও অনুকরণ:
রিভিউয়ার মনে করেন, জুরাসিক ওয়ার্ল্ড ফ্র্যাঞ্চাইজির নামটি ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের জন্য জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ তৈরি করা হয়েছে। এতে কোনো নতুনত্ব বা অনুপ্রেরণা নেই, বরং এটি পুরোনো ও ভালো ‘জুরাসিক পার্ক’-এর মুহূর্তগুলিকে নির্লজ্জভাবে অনুকরণ করেছে, কিন্তু খারাপভাবে। চরিত্রগুলির বিকাশে ব্যর্থতা এবং সামগ্রিকভাবে একটি “বোরিং” এবং “আলস্যপূর্ণ” স্ক্রিপ্ট এটিকে সম্পূর্ণভাবে অসফল করে তুলেছে।
৬. IMDB রেটিং ও রিভিউ:
যদিও রিভিউয়ার ব্যক্তিগতভাবে জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ একটি বাজে মুভি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, তবে অন্যান্য জুরাসিক ওয়ার্ল্ড চলচ্চিত্রের তুলনায় এর রেটিং সামান্য উন্নত। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড রিবার্থ’-এর আইএমডিবি রেটিং ৬.৩/১০, যা ‘ডোমিনিয়ন’ (৫.৬/১০) এবং ‘ফলেন কিংডম’ (৬.১/১০)-এর চেয়ে বেশি। এই রেটিং নির্দেশ করে যে ফ্র্যাঞ্চাইজির ভক্তদের মধ্যে ছবিটি কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, কিন্তু সমালোচক ও কিছু দর্শকের কাছে এটি তার পূর্বসূরিদের মতোই দুর্বল ও অপ্রত্যাশিত রয়ে গেছে।
আরো মুভি রিভিউ ও মুভি সম্পক্রে আপডেট জানতে চাইলে ভিজিট করুন contentlyrics


